প্রবন্ধ

দিবসের কথা

দিবসের কথা

আমরা অনেকসময় নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে চলে যাই । ঐক্যমত দেখলে আমাদের সন্দেহ হয়, সবাই একই বুলি আওরালে আমরা বিরক্ত হই । কি অদ্ভুত !! প্রথম অংশটুকুর অধিকাংশই বাস্তবিক জগতে এবং দ্বিতীয় অংশটুকুর অধিকাংশ ফেসবুকে । কেন এমন হয় !

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেসবুক আমাদের অধিকাংশের একমাত্র পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে । অর্থাৎ এর বাইরে যে একটা বৃহৎ পরিসর রয়েছে তাতে আমাদের দৃষ্টিসীমা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে । সুতরাং এই স্বল্প পরিসরে একই জিনিসের বারবার পুনরাবৃত্তি অনেকটা একই মঞ্ছে একই জোকস বারবার বলার মত । এটাই হল বাস্তবতা ।

 

কিন্তু বাস্তবতা আর সার্বজনীন সত্য কি এক ? অর্থাৎ বাস্তবতা যা, আমাদের কি তাই করা উচিৎ ? এখন বাস্তবতা হল ' অধিকাংশ লোক পানিতে দুধ মেশায় ' । সুতরাং আমাদেরও তাই করা উচিৎ ! বাস্তবতা বলে কথা । এখন মূল প্রসঙ্গে আসা যাক । শ্রেণীকক্ষে নির্দিষ্ট পিরিয়ড পরপর নতুন শিক্ষক প্রবেশ করেন । আমরা কিন্তু প্রতিবারই তাদেরকে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করি। চায় সে শিক্ষক আমাদের অত্যন্ত পছন্দের হোক কিংবা অপছন্দের। এখন এতে যদি কারো বিরক্তি চলে আসে তা নিতান্তই অজ্ঞতা । আসল কথা হচ্ছে বিভিন্ন দিবসে কিংবা ইস্যুতে আমরা প্রায় সবাই আমাদের অন্তরের কথাগুলো প্রকাশ করে থাকি এবং তার অধিকাংশই এই ফেসবুকের সল্পপরিসরের বিশাল সমাগমে লিখিতরুপে । সুতরাং একই কথার কিংবা একই ভাবের পুনরাবৃত্তি হবে এটাই স্বাভাবিক । কেননা আমাদের মধ্যে যেমন মতানৈক্য ঘটে তেমনি অনেক্ষেত্রেই অনুভূতিগুলো একই রুপে ধরা দেয় । যেমন তা যদি হয় মা দিবস । তাহলে কি হবে চিন্তা করুন । প্রতিটা মা ই তার সন্তানের কাছে একজন বীরযোদ্ধা, একজন মহীয়সী নারী, একজন অপ্সরী, এমনকি তার আপন ভুবন । সুতরাং চিন্তার জায়গায়, ভাব প্রকাশের জায়গায় ব্যক্তিমাত্রই অবশ্যই সামঞ্জস্য থাকবে । আর এই একই কথা, একই আবেগ, একই অনুভূতি, বারবার একই অনুভূতিতে, একই ভালবাসায়, গ্রহনই হচ্ছে মায়ের প্রতি সম্মান বা শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

 

'কেউ শুধু এই একদিনই ফেসবুকেই লুতুপুতু স্ট্যাটাস দেয় আর বছরের বাকি দিন কোন খবর নেই সুতরাং তার ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায় ভেজাল আছে ! আর এই ভেজালেরা যেহেতু মাকে নিয়ে লিখছে সুতরাং আমি কোন ক্রমেই তা নিয়ে লিখতে পারিনা !!' তাহলে ব্যপারটা দাঁড়াচ্ছে চোররাও ভাত খায় তাই আপনিও ভাত খাওয়া বাদ দেবেন । চোররা মা বলে ডাকে তাই আপনিও আর মা ডাকতে চান না !!

 

ভাই কথা হচ্ছে কোন দিবস পালন করার মানে শুধু ঐ দিনটিকেই সেই কাজের জন্য বেছে নেয়া নয় । ঐ দিনটি হচ্ছে সে কাজের জন্য ৩৬৫ দিনের প্রতীকী রূপ । আমাদের অন্তরের অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলা, নিঃসঙ্কোচে অন্তরের কথাকে প্রকাশ করা, আমাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের যে চর্চার প্রয়োজন; ঐ দিনটি হচ্ছে তারই ইঙ্গিত এবং তারই চর্চা কেন্দ্র । আর আমরা শ্রদ্ধাভরে তা সবাইকে জানিয়ে দিয়ে একেকটা প্রচার মাধ্যম হিসেবে কাজ করি ।

 

এ. এস. এম. সাজ্জাদুল ইসলাম

Share this content: